ভ্যাট থেকে অব্যাহতি চান সংবাদপত্র মালিকরা


সংবাদপত্রের জন্য আমদানি করা কাঁচামাল নিউজপ্রিন্টের উৎসে যে ১৫ শতাংশ মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) নেয়া হয়, তা থেকে অব্যাহতি দেয়ার দাবি জানিয়েছে নিউজ পেপার ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (নোয়াব)। সেই সঙ্গে নিউজপ্রিন্টের উপর যে ৫ শতাংশ আমদানি শুল্ক রয়েছে, তা প্রত্যাহার করে নেয়ারও দাবি জানিয়েছে সংবাদপত্র মালিক সমিতির এই সংগঠনটি।
সোমবার বিকেল সাড়ে ৫টায় রাজধানীর সেগুনবাগিচায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সম্মেলন কক্ষে প্রাক-বাজেট আলোচনায় নোয়াবের পক্ষ থেকে সংগঠনটির সভাপতি ও দৈনিক প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান এ দাবি জানান। এসময় ওই সংগঠনের সাথে জড়িত কয়েকটি জাতীয় পত্রিকার সম্পাদক ও মিডিয়া ব্যক্তিত্বরাও উপস্থিত ছিলেন।
মতিউর রহমান বলেন, ‘বর্তমানে সংবাদ পত্রের জন্য আমদানি করা কাঁচামাল নিউজপ্রিন্টের উপর আমদানি পর্যায়ে উৎসস্থলে ১৫ শতাংশ ভ্যাট নেয়া হয়। ইতিমধ্যে গত বছর প্রধানমন্ত্রী সংবাদপত্রকে একটি সেবামূলক শিল্প হিসেবে ঘোষণা করেছেন। যার ফলে আমাদের প্রত্যাশার পরিধিও সরকারে প্রতি পরিবর্তন হয়েছে। তাছাড়া সংবাদপত্র শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও কর্মসংস্থানের অগ্রগতিতে মানব কল্যাণধর্মী ও সেবামূলক প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করছে। তাই এই শিল্পকে আরো এগিয়ে নিয়ে যেতে ওই ১৫ শতাংশ ভ্যাট প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছি।’
নোয়াব সভাপতি বলেন, ‘আমাদের আমদানি করা কাঁচামাল নিউজপ্রিন্টের উপর ৫ শতাংশ আমদানি শুল্ক রয়েছে। আর এই কাঁচামাল প্রত্রিকা হিসেবে বিক্রি হওয়ার আগে মুদ্রণ, সংযোজন, মিশ্রণ ও কাটিংয়ের মাধ্যমে সংবাদপত্র হিসেবে বের করা হয়। যাতে করে পত্রিকা তৈরির খরচের প্রায় ৭০ শতাংশ চলে যায় এই নিউজপ্রিন্টের পিছনে। তাই এই রুগ্ন সংবাদপত্র শিল্পকে বাঁচাতে সরকারকে আমদানির উপর ৫ শতাংশ শুল্ক প্রত্যাহারেরও দাবি জানাচ্ছি।’
‘বিজ্ঞাপণের ওপর অগ্রিম আয়কর দেয়া সংবাদ শিল্পের জন্য আরেক অতিরিক্ত দায়’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বিজ্ঞাপণ এজেন্সি থেকে আয়করের প্রত্যায়নপত্র সংগ্রহ করা সময় সাপেক্ষ ব্যাপার। আবার অনেক ক্ষেত্রে এই প্রত্যয়নপত্র পাওয়া যায় না। ফলে বছর শেষে রিটার্নের সঙ্গে সংবাদপত্রকেই ওই কর্তন করা আয়কর পরিশোধ করা হয়। ফলে এই শিল্পকে প্রতিবছর বড় অঙ্কের আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়। তাই এই বিধান অবলোপন করার জন্য অনুরোধ করছি।’
তিনি আরো বলেন, ‘নোয়াব প্রতিষ্ঠার পর থেকে প্রায় দেরযুগ ধরে সরকারের সঙ্গে বিভিন্ন সময়ে মতবিনিময় ও পর্যবেক্ষণের আলোকে এই দাবি তুলে ধরা হয়েছে। এছাড়া অগ্রিম আয়কর দেয়ার বিষয়টি নিয়ে গত বছর অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করা হয়েছিলো। অর্থমন্ত্রী তখন ঐক্যমতও পোষণ করেছিলেন। সে সময় এনবিআরের একজন সদস্যও উপস্থিতি ছিলেন।’
তাই সংবাদপত্র শিল্পের সাথে কর্মরত বিপুল সংখ্যক কর্মীর প্রতি লক্ষ্য রেখে এই শিল্পকে নিজ পায়ে দ্বাড়ানোর জন্য সরকারের পক্ষ থেকে এসব যুক্তিযুক্ত সুবিধা দেয়া কর্তব্য বলে উল্লেখ করেন তিনি।
এই আলোচনায় এনবিআর চেয়ারম্যান মো. নজিবুর রহমানের সভাপতিত্বে আরো উপস্থিত ছিলেন- ডেইলি স্টারের সম্পাদক মাহফুজ আনাম, মানবজমিনের সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী, প্রকাশক এ কে আজাদ, ফিন্যানসিয়াল এক্সপ্রেসের সম্পাদক মোয়াজ্জেম হোসেন, ইত্তেফাকের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক তাসমিমা হোসেন ও নোয়াবের উপদেষ্টা আক্তার হোসেন খানসহ শুল্কনীতির সদস্য ফরিদ উদ্দিন ও অন্যান্য বিভাগের সদস্য ও বাজেট প্রণয়ন কমিটির সদস্যরা।

শেয়ার করুন

লেখকঃ

পূর্ববর্তী পোষ্ট
পরবর্তী পোষ্ট