দেশে ফিরতে চান সালাহউদ্দিন


বহু প্রতীক্ষিত মাহেন্দ্রক্ষণ যেন। অনেক বাধা বিপত্তি পেরিয়ে বিএনপি'র যুগ্ম মহাসচিব সালাহ উদ্দিন আহমেদের স্ত্রী হাসিনা আহমেদ শিলং সিভিল হাসপাতালে প্রবেশ করলেন। ধীর পায়ে এগিয়ে গেলেন সেই কক্ষের সামনে। ভেতরে ঢুকেই তার বাঁধ ভাঙ্গা ঢেউ যেন আছড়ে পড়ল। চোখের সামনে স্ত্রীকে দেখে অবাক বিস্ময়ে তাকালেন সালাহ উিিদ্দন আহমেদ। কান্নায় ভেঙ্গে পড়লেন দুজনেই। দুই মাসেরও বেশি সময় ধরে স্বামী নিখোঁজ ছিল, এরপর তার খোঁজ মিলল ভারতের মেঘালয় হাসপাতালে। সেই স্বামী সালাউদ্দিন আহমেদ জীবিত দাঁড়িয়ে আছেন তার সামনে। ফের দেখা হবার পর আবেগে কান্না ছাড়া আর কিছুই করার ছিল না তাদের। বেশ কিছু মুহুর্ত এভাবেই কেটে যায়। সম্বিত ফিরে পান, তবে তাদের মধ্যে কি কথা বার্তা হয় তা বিস্তারিত তাৎক্ষনিক ভাবে জানা যায়নি। যা জানতে বাইরে তখন সাংবাদিকরা হাসপাতালের গেটে অপেক্ষায় আছেন। কখন হাসিনা আহমেদ ফিরে আসবেন। সালাউদ্দিন আহমেদকে আদালতে সোপর্দ করা হলে আইনগত ও তার চিকিৎসার জন্যে স্বাস্থ্যগত বিষয়ে কি সিদ্ধান্ত নিলেন তা জানার জন্যে। বাংলাদেশ সময় গতকাল সোমবার রাত ৮টার সময় হাসিনা আহমেদ শিলং হাসপাতালে প্রবেশ করেন। আগের দিন রোববার রাতেই তিনি ঢাকা থেকে কোলকাতায় আসেন। এরপর সোমবার সকালে বিমানে গৌহাটি এসে সড়ক পথে রওনা দেন শিলং।
দেশে ফিরতে চান সালাহ উদ্দিন
দেশে ফিরতে চান বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সালাহ উদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেছেন, আমি আমার দেশে ফিরতে চাই। কারণ আমি কোন দাগী আসামি নই। আমি বাংলাদেশের একজন রাজনীতিবিদ। যদিও সরকার আমার বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের মাধ্যমে রেড এলার্ট জারি করেছে, কিন্তু তা ঠিক করেনি। এই প্রথম তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে পারলেন। শিলং সময় সকাল ১১টা ১১ মিনিটে হাসপাতালের এক ইউনিট থেকে তাকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল মূল ভবনে সিটি স্ক্যান করাতে। ঠিক তখনি অপেক্ষমান সাংবাদিকদের সামনে পড়ে যান তিনি। এসময় তার পরণে ছিল সাদা পাজামা, ফতুয়া। গায়ে জড়ানো ছিল চাদর। সাংবাদিকরা তাকে সামনে পেয়ে একের পর এক প্রশ্ন করতে থাকেন। যতটা সম্ভব হয় সালাহ উদ্দিন কয়েকটি প্রশ্নের উত্তর দেন। ধীরে ধীরে হাঁটছিলেন তিনি। কেমন আছেন সাংবাদিকরা এ প্রশ্ন করলে তিনি জানান, ভাল আছি। কিন্তু এখনো সব কিছু মনে করতে পারছি না। ভারতে কিভাবে এলেন জানতে চাইলে সালাহ উদ্দিন বলেন, আমার চোখ বাঁধা ছিল। শিলং গল্ফ লিংকে আমাকে গাড়ি থেকে নামিয়ে দেয়া হলে আশে পাশের মানুষকে স্থানটি কোথায় তা জিজ্ঞেস করি। এসময় স্থানীয় থানা কোথায় তা জানতে চাইলে আমাকে কয়েকজন পথ নির্দেশ করলে আমি থানায় যাই। তখন আমি পরিচয় দেই। আমি যে একজন সাবেক মন্ত্রী ছিলাম পুলিশ তা বিশ্বাস করতে চাইছিল না। এসময় সাংবাদিকদের বেশ কয়েকটি প্রশ্নে তিনি বলেন, হাত,পা ও কান বাঁধা অবস্থায় আমাকে ফেলে রাখা হয়। পরে স্থানীয়দের অনুরোধ করলে তারা পুলিশকে খবর দেয়। সেখান থেকে আমাকে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। তিনি বলেন, প্রায় ১২ থেকে ১৪ ঘন্টা জার্নি করার পর এখানে ফেলে রাখা হয়। গাড়িতে কোন কথাবার্তা শুনেছেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ওরা আমার কানও বেঁধে রাখে। তাই কোন ধরণের কথা শুনতে পারিনি। দেশে ফেরা ব্যাপারে তিনি বলেন, কেন দেশে ফিরবো না। বাংলাদেশ আমার দেশ। শরীরের অবস্থা জানাতে গিয়ে সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, খুবই অসুস্থ হয়ে আছি। অনেককিছু ঠিকমতো করতে পারছি না। এদিকে আইনী লড়াই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, কিছুক্সনের মধ্যে স্ত্রী আসছেন। তার সঙ্গে আলাপ করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে। এদিকে অসুস্থ সালাহউদ্দিনের স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য আজ মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হবে বলে জানান হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। স্ত্রী হাসিনা আহমেদ কলকাতায় এসে পেঁৗছেছেন তা জানালে সালাহ উদ্দিন জানান, শিলং সিভিল হাসপাতালে এসে পেঁৗছালে তার সঙ্গে আলাপ করেই তিনি সিদ্ধান্ত নেবেন।

শেয়ার করুন

লেখকঃ

পূর্ববর্তী পোষ্ট
পরবর্তী পোষ্ট