শীতে ‘কমলা লেবু’ খেতেই হবে যে ৯ কারণে


রূপকড়চা হেমন্তের শুরুতে শীতের আগমনী বার্তা চলে এসেছে। ক্যালেন্ডারের পাতায় গরম যাই যাই করছে। সূয্যিমামা শেষ মুহূর্তেও দেখিয়ে যাচ্ছে তার প্রতাপ। অনেকেই এরই মধ্যে লেপ-কম্বল নামাতে শুরু করেছেন। আর এই শীতের আবহাওয়া শুষ্ক, ধুলাবালির মাত্রাটাও কিছুটা বেড়ে যাওয়ায় দেখা দেয় নানা স্বাস্থ্যসমস্যা। শীতের শুরুতেই জ্বর, সর্দি ও কাশি যেন আঁকড়ে ধরে। তাই এ সময় শরীরটাকে সুস্থ রাখতে হলে আবহাওয়া বদলের এ মৌসুমে নিয়মিত কয়েক কোয়া কমলা লেবু না খেলে যে চলবে না।
কমলা লেবুতে থাকা ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট নামে দুটি উপাদান ইমিউনিটিকে শক্তিশালী করে তোলে। শুধু তাই নয়, এই সুস্বাদু ফলটিতে রয়েছে প্রচুর মাত্রায় পটাশিয়াম, কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, ফাইটোকেমিক্যাল এবং ফ্লেবোনয়েড, যা নানাভাবে শরীর গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। সেই সঙ্গে আরও নানা উপকারে তো লাগেই।
শীতের শুরুতেই সুন্দরী কমলা খাওয়ার বিভিন্ন উপকারিতা সম্পর্কে জানিয়েছে জীবনধারাবিষয়ক সাময়িকী বোল্ডস্কাই। এই যেমন ধরুন...
১. কিডনিতে পাথরের মতো রোগের খপ্পরে পরার আশঙ্কা কমে
বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে নিয়মিত কমলা লেবু খাওয়া শুরু করলে শরীরে এমন কিছু উপাদানের মাত্রা বৃদ্ধি পায়, যার প্রভাবে কিডনি ফাংশনের উন্নতি ঘটে। সেই সঙ্গে কিডনি স্টোনের মতো রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও যায় কমে।
২. ক্যান্সারের মতো মারণ রোগ দূরে থাকে
একাধিক পরীক্ষার পর একথা জলের মতো পরিষ্কার যে কমলা লেবুতে উপস্থিত সাইট্রাস লেমোনয়েডস, শরীরে প্রবেশ করার পর এমন খেল দেখায় যে ক্যান্সার সেল জন্ম নেওয়ার কোনো সম্ভবনাই থাকে না।
৩. ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণে চলে আসে
একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে কমলা লেবুতে উপস্থিত অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে রক্তচাপ একেবারে নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। এই একটা কারণেও নিয়মিত কমলা লেবু খাওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা।
৪. ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধি পায়
শীত মানেই ত্বকের আর্দ্রতা কমে যাওয়া। সেই সঙ্গে সৌন্দর্য্য কমে যাওয়া যেন খুবই স্বাভাবিক ব্যাপার। তাই তো এই সময় সৌন্দর্য্য ধরে রাখতে ত্বকের আলাদা করে খেয়াল রাখে কমলা লেবু। কারণ নিয়মিত এই সাইট্রাস ফলটি খেলে শরীরে ভিটামিন সি ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের মাত্রা বাড়তে শুরু করে। ফলে একদিকে যেমন ত্বকের আর্দ্রতা বজায় থাকে, তেমনি অন্যদিকে বলিরেখা কমতে শুরু করে, কালো ছোপ দাগ মিলিয়ে যায় এবং ত্বক তুলতুলে হয়ে ওঠে। এক কথায় শীতের মরসুমে ত্বকের পরিচর্যায় কমলা লেবুর কোনো বিকল্প হয় না বললেই চলে।
৫. হার্টের ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়
কমলা লেবুতে উপস্থিত ফাইবার এবং অন্যান্য উপকারি উপাদান দেহের ভেতরে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমানোর পাশাপাশি রক্তচাপকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই হার্টের কোনো ধরনের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা একেবারে কমে যায়।
৬. দেহের ভেতরে প্রদাহের মাত্রা কমে
শীতকালে খেয়াল করে দেখবেন জয়েন্ট পেইনের কারণে ভোগান্তি খুব বেড়ে যায়। কারণ এই সময় দেহের ভেতরে প্রদাহ বা ইনফ্লেমেশন মাত্রা ছাড়ায়, যে কারণে এমন পরিস্থিতি মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে। এক্ষেত্রেও কিন্তু কমলা লেবু আপনাকে সাহায্য করতে পারে।
৭. ইনসোমনিয়ার মতো সমস্যা দূরে পালায়
নানা কারণে রাত্রে ঠিক মতো ঘুম হয় না? সেই সঙ্গে ক্লান্তিও যেন বাধ ভেঙেছে? এ কারণেই রোজকার ডায়েটে কমলা লেবু থাকা অনিবার্য! কারণ এই ফলটির শরীরে থাকা ফ্লেবোনয়েড, বেশ কিছু নিউরোট্রান্সমিটারকে অ্যাকটিভ করে দেয়। এতে একদিকে যেমন অনিদ্রার সমস্যা দূর করে, তেমনি স্মৃতিশক্তি এবং কগনিটিভ পাওয়ার বাড়াতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
৮. ওজন কমে চোখে পরার মতো
শীত মানেই ভুরিভোজ। শীত মানেই পিকনিক। আর শীত মানেই ২৫ এবং ৩১ ডিসেম্বরের উত্তাল পার্টি। ফলে এই সময় ওজন বেড়ে যাওয়াটা একেবারেই অস্বাভাবিক ঘটনা নয়। এমন পরিস্থিতিতে যদি প্রতিদিন একটি করে কমলা লেবু খেতে পারেন, তাহলে ওজন বাড়ার চিন্তা থেকে কিন্তু মুক্তি মিলতে পারে!
৯. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার উন্নতি ঘটে
কমলা লেবুতে উপস্থিত ভিটামিন সি, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, অ্যাসকর্বিক অ্যাসিড এবং বিটা-ক্যারোটিন শরীরে প্রবেশ করার পর রোগ প্রতিরোধী ব্যবস্থাকে এতটাই শক্তিশালী করে তোলে যে ছোট-বড় কোনো রোগই ধারে কাছে ঘেঁষতে পারে না। সেই সঙ্গে নানা ধরনের সংক্রমণে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও হ্রাস পায়।


শেয়ার করুন

লেখকঃ

পূর্ববর্তী পোষ্ট
পরবর্তী পোষ্ট