প্রস্তুতি ম্যাচে কী বার্তা পেল বাংলাদেশ?


এমনিতেই ৪০ ওভারের ম্যাচ। সব মিলিয়ে খেলা হলো ৩০ ওভার। তাতেই যা বার্তা দেওয়ার দিয়ে দিল দক্ষিণ আফ্রিকা। ঘরের মাটিতে টানা তিনটি সিরিজ জেতা বাংলাদেশকে নিয়ে যথেষ্ট গবেষণা করেই এসেছে প্রোটিয়ারা। এক মিলিমিটার ছাড় নেই। নিজেদের সর্ব​শক্তি নিয়েই লড়াই করবে। বাংলাদেশকেও তাই দিতে হবে সামর্থ্যের পরীক্ষা। পাকিস্তান-ভারতকে সিরিজে হারানো যে নিতান্তই ঘটে যাওয়া কোনো ঘটনা নয়—তার​ প্রমাণ।
বিসিবি একাদশের বিপক্ষে প্রস্তুতিটা ভালোই করেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। কিন্তু বিসিবি একাদশের খেলোয়াড়েরা কি পারল নিজেদের তুলে ধরতে? যদিও এ মুহূর্তে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টির জন্য ঘোষিত দলের অধিকাংশ খেলোয়াড়ই ছিলেন না এ ম্যাচে। তবুও বিসিবি একাদশের পারফরমেন্স নিশ্চয় ভাবাবে মূল একাদশকে। ঝালিয়ে নেওয়ার সুযোগটা হাতছাড়া করায় আফসোস ইমরুল কায়েসের কণ্ঠেও ‘টি-টোয়েন্টিতে যারা স্কোয়াডে আছে তাদের ভালো সুযোগ ছিল এখানে অনুশীলন করার। সোহাগ গাজী অনেক দিন পর এমন একটি ম্যাচে মাঠে নেমেছে। মূল ম্যাচে মাঠে নামার আগে একটা অভিজ্ঞতা হলো ওর। সব মিলিয়ে ভালো একটি সুযোগ ছিল।’
বিসিবি একাদশের ব্যাটসম্যানদের আউটের ধরন ছিল বেশ হতাশাজনক। বিশেষ করে পাঁচজন ব্যাটসম্যানের বোল্ড হওয়াটা দৃষ্টিকটুই বটে। তবে কি ব্যাটসম্যানরা প্রোটিয়া বোলারদের ঠিকমতো পড়তে পারেননি? বিশেষ করে কাইল অ্যাবটের বলে দুই ওপেনারের বোল্ড হওয়ার কথা বলতেই হবে। নিজেদের দুর্বলতার খুঁজে বের করার চেয়ে প্রতিপক্ষের বোলারদের তারিফ করলেন ইমরুল, ‘ওদের বোলিং বিশ্বের অন্য দলগুলোর চেয়ে নিখুঁত। আমাদের দুজন (ওপেনার) যে বলে আউট হয়েছে, দুটোই দারুণ ছিল। ব্যাটসম্যানরা মারতে গিয়ে আউট হয়নি। এমন বোলিং এ সিরিজে সব ব্যাটসম্যানকেই মোকাবিলা করতে হবে।’
পেসারদের পাশাপাশি স্পিন আক্রমণটাকে পাশ কাটিয়ে যাওয়ার উপায় নেই, সেটিই বুঝিয়ে দিলেন প্রোটিয়া স্পিনাররা। প্রোটিয়া স্পিনেই বধ বিসিবি একাদশের অধিনায়কসহ চার ব্যাটসম্যান! নিজেদের দায়টা এড়ালেন না ইমরুল, ‘আমরা আসলে সবাই তাড়াহুড়া করেছি। পরিকল্পনা ছাড়া ব্যাটিং করেছি। যদি আমাদের টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানরা শুরুটা ভালো এনে দিত এবং ১৩০-১৪০ রান করতে পারতাম। তবে বোলাররা স্বাচ্ছন্দ্যে বোলিং করার সুযোগ পেত। আর আমার আউট নিয়ে বলব, ভেবেছিলাম ওটা ছয় হবে। গ্যাপেই মেরেছিলাম। ক্যাচটা খুব ভালো হয়েছে। একে দুর্ভাগ্যও বলা চলে!’
ইমরুল স্বীকার করলেন, ভারতীয় বোলারদের তুলনায় দক্ষিণ আফ্রিকার বোলাররা অনেক বেশি পরীক্ষা নেবেন ব্যাটসম্যানদের, ‘ভারতীয় বোলারদের চেয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার বোলাররা বেশি নিখুঁত। ওরা জানে, কোন জায়গায় বোলিং করতে হবে, কোথায় বল করলে উইকেট পাওয়া যাবে, রানের চাকা আটকে রাখা যাবে। তবে আমাদের ব্যাটসম্যানরা উইকেটে গিয়ে একটু সময় নিলেই মানিয়ে নিতে পারবে। বড় কোনো সমস্যা হবে না।’
দক্ষিণ আফ্রিকার সমৃদ্ধ ব্যাটিং লাইনআপ, অসাধারণ পেস আক্রমণ, দুরন্ত ফিল্ডিং—সব মিলিয়ে বেশ কঠিন সিরিজ অপেক্ষা করছে বাংলাদেশের সামনে। তবে আত্মবিশ্বাসী ইমরুল মনে করেন সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের সাফল্য বজায় থাকবে এ সিরিজেও, ‘মনে হয় না সেরকম কঠিন হবে এই সিরিজ। ক্রিকেট মনস্তাত্ত্বিক খেলা। সবাই যদি মানসিকভাবে ইতিবাচক থাকে, আমাদের জন্য ভালো হবে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে যারা খেলছে তারাই প্রতিটি দলের বিপক্ষেই খেলছে। এটা খুব বড় করে দেখার কিছু নেই। বাংলাদেশ দলও এখন বদলে গেছে। সবাই ভালো খেলছে। আমাদের মানসিকতারও পরিবর্তন হয়েছে। আমার বিশ্বাস ভালো কিছুই হবে।’
সিরিজে কী হবে, সময়ই বলে দেবে। তবে ফতুল্লার প্রস্তুতি ম্যাচটি বাংলাদেশ দলের জন্য সতর্কবার্তাই বটে।

শেয়ার করুন

লেখকঃ

পূর্ববর্তী পোষ্ট
পরবর্তী পোষ্ট
3 July 2015 at 10:43

প্রস্তুতি ম্যাচে বিসিবি দূবল দল দিয়ে ওদেরকে অতি আত্নবিশ্বাসী হতে সুযোগ দিয়েছে।কিন্তু মুল জাতিয় দল আর বিসিবি দল এক নয়। বোলিং ব্যটিং কোন মিলও নেই বিসিবি ও জাতিয় দলের মধ্যে।তাই এটি সাউথ আফৃিকার জন্য কি বাতা দিয়েছে সেটিই মুল খেলায় দেখা যাবে।তবে সাউথ আফৃিকার বোলিং খুবই শক্তিশালী ও সবাই কিন্তু স্লোয়ার কাটার দিতে জানে। আইপিএল এ সবাইকে খুব ভালো করেই চেনা। আর কিলার মিলার, ডুমিনি, এবি ডিভিলায়ারস তো আছেই। তাই বাংলাদেশের অতটা সহজ হবেনা জেতা। তবুও ভালো খেলার আশা রাখি।

Reply
avatar